প্রেম ও মজলিশি | Prem O Majlishi

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
আমি স্থির করলুম, আমার বাচ্চাটাকে আমি বিসর্জন দেব। হাজার হোক, আমার ছোট বোন। তার হক্ক বেশি। আমি তাকে ভালোবাসি। আমি তাকে সাহায্য করতে চাই। --_-সে বেচারি একেবারে ভেঙে পড়েছে। আমিও যদি মুখে কলঙ্কের ছোপ মাখি তবে তার হয়ে পাঁচজনের সঙ্গে লড়াই দেব কি করে? আমি মেয়েটির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়েছিলুম। যে যেন একেবারে পাযাণ হয়ে গিয়েছে। এবারে সরকারী উকিল বললেন, “নদীপারে নির্জনে আসামী বাচ্চা প্রসব করে তাকে জলে ফেলে HA! তারপর একটু থেমে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, “কিন্তু সেখানে আর কেউ ছিল না বলে প্রমাণ করা অসম্ভব না হলেও সুক্ঠিন, বাচ্চাটা মৃতাবস্থায় জন্মেছিল কি a’ সমস্ত আদালত-ঘর নিস্তব্ধ, নীরব। এইবারে প্রথম জজ মুখ খুললেন। সামনের দিকে শূন্য দৃষ্টি ফেলে শুধোলেন, “বাচ্চাটা জন্মের সময় জীবিত না মৃত ছিল?' মেয়েটি একবার মুখ তুলে তাকিয়ে ফের মাথা নিচু করলো। বললে, আমি সত্যই শপথ করে বলতে পারবো না। আমি-_আমার--আমি তখন সব-কিছু বুঝতে পারিনি।' আশ্চর্য, জজ তো নয়-ই, সরকারী উকিল পর্যন্ত কোনও রকম জেরা বা চাপাচাপি করলেন না, প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করার জন্য। কারণ এটা তো আইনত স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বাচ্চা জ্যান্ত জন্মে থাকলে এটা খুন-_হয়তো মারডার নয়, মানন্নটার--আর মৃতাবস্থায় জন্মে থাকলে বা জন্মের পরেই যদি মরে গিয়ে থাকে তবে বাচ্চা প্রসবের কথা পুলিশকে জালায়নি বলে অপরাধটা কঠিন নয়--হাইডিং অব্‌ এভিডেন্স্‌, সত্য তথ্য নির্ধারণের প্রমাণ গোপন করেছে শুধু। মোকদ্দমা এখানেই শেষ বলা যেতে পারে। কিন্তু জজ তবু একটা প্রশ্ন শুধোলেন, 'আচ্ছা, তুমি সেই ছেলেটার সন্ধান নিলে না কেন? তাকে বিয়ে করাতে বাধ্য করালে না কেন?” Poly পাকানো গোখরো সাপ যে রকম হঠাৎ ফনা তুলে দাঁড়ায় মেয়েটা ঠিক সেই রকম বলে উঠলো, “কী! সেই কাপুরুষ-_যে আমাকে: অসহায় করে ছুটে পালালো! তাকে বিয়ে করে আমার বাচ্চাকে দেব সেই কাপুরুষের, সেই পশুর ATA!’ তারপর দু'হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললে। গোঙরানোর শব্দ কানে এল। আমি তার মুখের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে পারিনি। প্রেম যে কী দ্বেষ, কী ঘৃণায় পরিণত হতে পারে তার বিকৃত মুখে দেখলুম-_ পূর্বেও দেখিনি, পরেও দেখিনি। আমি বসেছিলাম একেবারে দরজার পাশে । নিঃশব্দে বেরিয়ে গেলুম। দু'দিন পরে CHA সাথে ফের দেখা। বললে, “ছোঃ, তুই বড্ড Sot! পালালি?' “কি সাজা হল?” 'চার মাস। কিন্তু জেলে যেতে হবে না। গাঁয়ের পাদ্রি সাহেবের কাছে প্রতি সপ্তাহে একবার করে হাজিরা দিতে হবে-_গুড় কনডাকটের রিপোরট দেবার জন্য। আদালত বললেন, “সমস্ত পরিবার যে বদনামের পাবলিসিটি পেল, সে-ই যথেষ্ট সাজা--আর যার ফাঁসি হওয়া উচিত সে তো আদালতে A!’ প্রেম যে কী দ্বেষ, কী ঘৃণার-- [ রাজাউজির--_রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড] ১৪



Leave a Comment