সোনার আলপনা [সংস্করণ-১] | Sonar Aalpana [Ed. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
পরিণত বয়সের নারীকে প্রথম ভালোবেসেছিলেন বলে অল্পবয়স্কা তরুণীদের প্রতি বালজাক কখনো আকর্ষণ অনুভব করেননি | তিনি বলতেন, “চল্লিশ বছরের নারী তোমাকে সর্বস্ব দিতে পারে, বিশ বছরের তরুণী কিছুই দেবে না ।” উনবিংশ শতাব্দীতেও তিনি অষ্টাদশী তরুণীকে পূর্ণ যৌবমের প্রতীক বলে স্বীকার করেননি | পয়ত্রিশ বছর বয়সে নারী পূর্ণতা লাভ করে বলে তিনি বিশ্বাস করতেন | বিবাহিত জীবনে যে-সব মেয়েরা অসুখী তাদের প্রতি বালজাকের ছিল গভীর সহানুভূতি | অবিবাহিতাদের সম্বল থাকে তাদের স্বপ্ন । কিন্তু বিয়ের পরে যাদের স্বপ্ন ভেঙে যায় তাদের কোনোই অবলম্বন নেই | আশাভঙ্গের বেদনায় যদি প্রচলিত অনুশাসন লঙ্ঘন করে তাহলে সমাজের নিকট এদের লাঞ্ছনা পেতে হয়। বিবাহিতা মেয়েদের আশাহীন AGUA জীবনের কথা বালজাকের রচনাবলীতে প্রাধান্য লাভ করেছে | জোলার মতো তিনি পতিতাদের নিয়ে মাথা ঘামাননি | যারা সমাজ-নির্দিষ্ট সুস্থ জীবনযাপন করতে উৎসুক হয়েও ব্যর্থ হয়েছে, সেইসব বিবাহিতা মেয়েদের জীবনের ত্রুটি বিচ্যুতির সহানুভূতিপূর্ণ ছবি GPE. বালজাক | এমন করে তাদের কথা আর কেউ বলেনি | তাই বালজাকের রচনাবলী মেয়েমহলে অভূতপূর্ব সমাদর লাভ করেছে | যুরোপের সকল দেশ থেকে ভক্ত পাঠিকারা কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে তাঁকে | বালজাকের বাক্তিগত জীবনে দেখতে পাই, তিনি যত মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন তারা সকলেই পরিণত বয়সের বিবাহিতা নারী, মাদাম দ্য বার্নির সহিত তাঁর সম্পর্কের অভিজ্ঞতা থেকে বালজাক বলেছেন, “নারীর সর্বশেষ ভালোবাসা যদি পুরুষের প্রথম ভালোবাসা জাগ্রত করতে পারে, তাহলে তেমন মধুর প্রেম আর কিছুই হতে পারে না ।” মাদাম দ্য বার্নিকে জয় করে বালজাকের আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হল | গত ক'বছরের মধ্যে ছদ্মনামে প্রকাশিত বইগুলির বিক্রি দেখে লেখক হিসাবে নিজের উপর আস্থা জেগেছে | বালজাকের মন হল বইয়ের ব্যবসা করে অর্থ সঞ্চয় করতে পারলে নিশ্চিন্ত মনে প্রথম শ্রেণীর সাহিত্য.রচনায় হাত দেওয়া যেতে পারে | অর্থের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি না পেলে সত্যিকার ভালো লেখা হতে পারে না। একটা ভাবনা জাগলেই তাকে কার্যে পরিণত করতে দেরি সয় Ali বালজাক আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে ব্যবসা শুরু করলেন | অল্পদিনের মধ্যেই ব্যবসা ফেল মেরে গেল | বইয়ের ছাপানো ফমাগুলি ওজন দরে বিক্রি করে, দিয়ে দেনার বোঝা নিয়ে ঘরে ফিরে এলেন | অন্য কেউ হলে হতাশ হয়ে পড়ত | কিন্তু বালজাক দমবার পাত্র নন | তাঁর মনে হল, ছাপাখানা থাকলে বইয়ের ব্যবসা ভালো চলবে | সুতরাং নতুন দেনা করে আরম্ভ করলেন ছাপাখানা । এই ছাপাখানাও কিছুদিনের মধ্যে লোকসানের পথে অদৃশ্য হয়ে গেল । বালজাক পরিবারের CHAVA বন্ধন থেকে মুক্তি পাবার জন্য পাগল হয়েছিলেন | fay বাঁধা পড়লেন বিপুল দেনার বন্ধনে | নিজের অদূরদর্শিতার জন্য সারা জীবন তাঁকে ফল ভোগ করতে হয়েছে | অর্থের ভাবনা থেকে মুক্তি পেয়ে একান্তরাপে লেখায় আত্মনিয়োগ করবার স্বপ্ন তাঁর জীবনে কোনোদিনই সফল হয়নি | মাত্র উনত্রিশ বছর বয়সে সর্বস্বাস্ত হয়ে দেনার বোঝা মাথায় করে যাত্রা শুরু হল । নিজেকে বাঁচতে হবে, পাওনাদার ঠেকাতে হবে | অথচ অর্থ উপার্জনের মতো বৃত্তি জানা নেই | একমাত্র দুর্বল ভরসা লেখনী | ব্যবসার মোহ ত্যাগ করে কলমকেই সম্বল করলেন বালজাক | বালজাকের দ্বিতীয় vale সাহিত্য-জীবনের প্রথম উপন্যাস The last of the . ১৫



Leave a Comment