পাঁচটি রানী কাহিনী | Panchti Rani Kahini

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৪ পাঁচটি রানী কাহিনী বাড়াতে। সুতরাং, তাকে কেকয়রাজ্যের অতিথিরূপে বরণ করা কতখানি সঙ্গত পিতাকে তা ভেবে দেখতে হবে। ' সেনাপতি অশ্বসেন বলল : অযোধ্যাপতি দশরথ কখনই অতিথির যোগ্য নন। কেকয় রাজ্যের ভেতর দিয়ে তার চতুরঙ্গ বাহিনীর যাত্রা কিছুতে অনুমোদন করা যায় না। এতে দেশের নিরাপত্তা ক্ষু্ন হয়। প্রকৃতপক্ষে, এই সমরাভিযান তার সামরিক বাহিনীর মহড়া। বিপক্ষদলের মনে অকারণ একটা উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের মনোবল নষ্ট করা এবং এক দুঃসহ স্নায়ু উত্তেজনায় সর্বক্ষণ ব্যস্ত ও ত্রস্ত রেখে তাদের আত্মবল ধ্বংস করে, তাদের সামরিক প্রতিক্রিয়া ও মতিগতি নির্ণয় করার এক চমৎকার দাওয়াই এই সামরিক মহড়া। শত্রুকে ছুঁগ্নিয়ার করা এবং তার আচরণকে যথেষ্ট সংযত ও ANT রাখার এক পরোক্ষ চাপ। চতুর অযোধ্যাপতি ঠাঙা মাথায় ay যুদ্ধের এক উত্তপ্ত আবহাওয়া সৃষ্টি করে শম্বরের প্রতি আমাদের কর্তব্য ও বন্ধুত্ব জাগ্রত করে এক = রাজনৈতিক জয় আদায়ের ফন্দী এঁটেছেন। শম্বরের সঙ্গে আমাদের বিভেদ সৃষ্টি তার উদ্দেশ্য। তার জয়ে আমাদের পরাজয়। এ কথা মনে রেখে আমাদের কর্তব্য নির্ধারণ করতে Ara মন্ত্রীবর সুবীর ধীরে ধীরে ste গলায় বলল : সেনাপতি অশ্বসেনের বক্তব্য আমি সমর্থন করি। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, Teas যুদ্ধে নিবৃত্ত করার কৌশলরাূপে ধূর্তরাজা সরল, মহাপ্রাণ, অতিথিবৎসল HHA রাজকে ব্যবহার করবে। অথবা, কেকয় রাজ্জ্যের দুর্বলতার রন্ত্বূপথগুলি অনুসন্ধান করে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দাবি আদায়ের চাপ সৃষ্টি করবে। তারপর কয়েক মুহূর্ত Pat করে মন্ত্রীবর সুবীর পুনরায় বলল : আমার আরো ধারণা, অতাস্ত সজ্জন, অতিথিবৎসল কেকয়রাজকে আতিথেয়তায় ব্যস্ত রেখে শম্বরকে নির্বাদ্ধব করাও তার উদ্দেশ্য হতে পারে। শুধু তাই নয়, অযোধ্যার বিশাল সৈন্যবাহিনীর আহারাদি এবং অন্যান্য সুখ সুবিধার ব্যবস্থা করতে কেকয়ের শস্যভাণ্ডার এবং অর্থ ভাণ্ডারে যথেষ্ট টান পড়বে। এর ফলে কেকয় রাজ্যে বেশ একটা অর্থনৈতিক অসুবিধা সৃষ্টি হবে। বিপুল ক্ষয় ক্ষতির অঙ্কে কেকয় রাজ্যে এমন এক দূর্বিষহ অবস্থার উদ্ভব হবে যা তার নিজের অস্তিত্বকেই বিপন্ন করে তুলবে। অতএব অযোধ্যাপতির প্রবেশ নিরর্থক এবং ক্ষতিকর। কেকয়রাজ অশ্বপতি কিন্তু এত সব কথার মধ্যে একটি কথাও বললেন না। মনোযোগ সহকারে সকলের কথা শুনছিলেন। প্রত্যেকের বক্তব্যে যথেষ্ট যুক্তি এবং চিস্তা ছিল। নিজেকে যথাসম্ভব তাদের আলোচনা থেকে দূরে রেখে নিরাবেগ চিত্তে তাদের শণিত কথাগুলি পুথ্খানুপুজ্ছভাবে বিশ্লেষণ করছিলেন। অকস্মাৎ একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস পড়ল তার। আস্তে আস্তে নিরুদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন : মহামতি দশরথের উদ্দেশ্য ও অভিপ্রায় আমাদের অপরিজ্ঞাত। তবু তাকে নিয়ে যে আলোচনা হল তাতে প্রত্যেকের দেশপ্রেম, স্বজাতিপ্রীতি, বন্ধুত্বের মর্যাদারক্ষায় আস্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে। আপনাদের প্রত্যেকের কথা শুনে আমি ভীষণ আনন্দিত এবং গর্বিত। আগনাদের মত আমি এদেশের গৌরব ও মর্যাদা রক্ষায় সচেতন। আপনাদের সকলের বক্তব্য যত যুক্তিপূর্ণ হোক না কেন, অনুমানের উপর নির্ভর করে শুধু সন্দেহের বশে তার আতিথ্যের আবেদনকে যথাযোগ্য মর্যাদা না দেয়ার কোন যুক্তি থাকতে পারে না। আপনাদের পুনর্বিবেচনার জন্যই আমি কতকগুলি কথা বলার প্রয়োজন অনুভব করছি। অকারণ শত্রু সৃষ্টি করা রাজনীতির ধর্ম নয়। মিত্র আচরণে পরিতুষ্ট রেখে হৃদয় জয় করা শ্রেষ্ঠ রাজনীতিকের কূটকৌশল। তাই বলছি, মাননীয় অতিথিকে অকারণ সন্দেহের চোখে দেখে যদি ভুল করি তা-হলে শত্রুর হাতই শক্ত হবে তাতে। সমাদরে যাকে ধন্য করতে পারি, অনাদর করে তাকে শত্রু করব কেন? তার বিশাল সমর বাহিনী সম্পর্কে সেনাপতি অশ্বসেনের আশঙ্কার কোন ভিত্তি নেই। রাজ্যের ভেতর দিয়ে সেনাবাহিনী গেলেই যে রাজ্য জয় হয়ে গেল, আমি বিশ্বাস করি না। আমাদের সতর্ক সেনাবাহিনী সর্বদা মিত্রবাহিনীকে বেষ্টন করে আছে। রাজ্য সীমার বাইরে বেরোনোর পথ THI বইরের পথ খোলা না থাকলে অবরুদ্ধ হয়ে দীর্ঘকাল যুদ্ধ করা যায় না। রসদ এবং যুদ্ধান্ত্রের নিয়মিত সরবরাহের পথ বন্ধ রেখে কোন মূর্থও যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে না। এই সরল সত্য কথাটা মনে রাখলে আর আশঙ্কা থাকবে না। অতএব, আপনাদের সম্মতি পেলে মহামান্য অতিথি বরণের আয়োজন করতে পারি।



Leave a Comment