উপন্যাস সমগ্র ২ | Upanyash Samagra 2

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ভয় আমার জীবিকার উপার্জনের, প্রতিষ্ঠার । কাজি সাহেব যদি বলেন আর আমি রুমিকে বিয়ে না করি, তাহলে আমাকে তার চেম্বার ছেড়ে দিতে ACA এইটেই আমার অজ্ঞাতে জন্য দিয়েছে এ Saba | কাজি সাহেবের মতো খ্যাতনামা, প্রতিপত্তিসম্পন্ন এ্যাডভোকেটের জুনিয়র হতে পারাটা ভাগ্যের কথা; পশার তার অমিত সম্ভাবনায় ভরা 1 সেই কাজি সাহেব যদি আমাকে খারিজ করে দেন তো আমাকে পথে গিয়ে দাড়াতে হবে । আবার নতুন করে শুরু করতে হবে জীবন | আবার সেই AMT) মাসে যে আজ আমার or পাঁচেক আসছে-_ এর ধারা বন্ধ হয়ে যাওয়ার অর্থ আমার স্ব স্বপ্নের মৃত্যু । আমি তো জানি কী ভীষণ এই একাকীত্ব, এই টাকা না থাকাটা, এই লড়াই | ছোটবেলায় বাবা মারা যাবার পর, আমার তখন চার বছর বয়স শুনেছি, মা'র আবার বিয়ে হলো | আমাকে রেখে গেলেন চাচাদের হাতে 1 তার নতুন স্বামীকে দেখিনি কখনো । মা- কেও তারপর থেকে আর কোনদিন না । চাচাদের কাছে ভয়ঙ্কর বর্ণনা শুনতাম | লোকটা খুব চাষা, চোয়াড়ে আর বিস্তর টাকা তার । মামারা কেউ ছিলেন না, মামা-বাড়ির অবস্থা ছিল খুব খারাপ | মা-কে তাই আবার নতুন ঘর করতে যেতে হয়েছিল | আমার এসব কিস্সু মনে নেই | কেবল একটা ছবি মনে আছে, আমাকে কোলে করে দলা করে ভাত পাকিয়ে ছড়া বলতে বলতে মা খাইয়ে দিচ্ছেন | চেহারাটা মনে নেই | ঘরে একটা ডিবে জ্বলছে । খুব ধোয়া হয়েছে। আর একটা ছবি, গোরস্তানে বাবাকে ওরা কবর দিতে নিয়ে গেছে | আমিও গেছি | আমি আমার সমান কয়েকটা ছেলের সঙ্গে দূরে একটা ভাঙা কবর থেকে ছাতার গোড়া দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তুলছি একটা মড়ার খুলি আর খুব মজা পাচ্ছি। খুব রোদ বলে আমাকে ছাতাটা দিয়েছিল | খুলিটাকে গড়াতে গড়াতে নিয়ে যাচ্ছি বালু-বালু মাটির ওপর দিয়ে, থানকুনি পাতার ভেতর দিয়ে, কারা যেন গাদা ফুলের গাছ লাগিয়েছে তার দিকে | মেলা ফুল ফুটেছে হলুদ হলুদ | ছাতাটাকে আমি কিছুতেই বাগে আনতে পারছি না । এমন সময় কে একজন এসে বলল, গ্যাদা, শীগগীর আসো | তোমার বাপেরে না মাটি দিতাছে, দেখবা না ? ব্যাস এইটুকু । আর কিছু মনে নেই । আমি গিয়েছিলাম কী গিয়েছিলাম না, দেখেছিলাম কী দেখেছিলাম A কতদিন ভাবতে চেষ্টা করেছি__ একেবারে শাদা, কুয়াশার মতো । কিছু মনে পড়ে AT চাচারা খুব কালো মুখ করে দেখতেন আমাকে | আমি সেই ছোটবেলা থেকেই জানতাম, যাদের বাবা নেই তাদের কেউ নেই । ইস্কুলে আমাদের হেডমাস্টার ক্লাশের ছেলেদের বলতেন, ওর সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করো না যেন ৷ ওর বাবা নেই ৷ ওর কত দুঃখ | দুঃখের কথা শুনে খুব আবছা একটা গর্ব হতো তখন | আমি সবার থেকে আলাদা 1 ক্লাশে একদিন ইংরেজির স্যার 'অরফান' শব্দের বাংলা বলতে গিয়ে উদাহরণ দিলেন আমাকে | ভারী স্কূর্তে হলো আমার | এখন মনে পড়লে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় । আবার ভাবি, বেশ ছিলাম তখন | দুঃখকে দুঃখ মনে হতো না, আনন্দকে বুঝতে পারতাম না তখন | মানুষ বড় হলেও যদি এ রকম হতো তাহলে তাকে বুঝি সুখী বলতো সবাই | কিন্তু ওটাতো অবোধের কাল। এখন এই যে আমি বড় হয়েছি, দুঃখ হলে দুঃখটাকে একেবারে ভেতর থেকে নিংড়ে CY বেরোতে দেখছি, এক ঝলক আলোর মতো আবার আনন্দে ভরে উঠছি__ আর সেই আনন্দটুকু স্মৃতির মধ্যে প্রদীপের মতো জ্বলছে, এই শক্তিটার নাম বোধ হয় জীবন | চাচারা অনেক করেছেন | এম.এ. পরীক্ষায় যখন থার্ড ক্লাস পেলাম, বক্লেন তারা | কী যে ১৪



Leave a Comment